ঢাকা,  বুধবার  ০৩ জুলাই ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

‘বেলাশেষে’ ফের খালেদা মুক্তির আন্দোলন বিএনপির

প্রকাশিত: ২০:১৯, ৩০ জুন ২০২৪

‘বেলাশেষে’ ফের খালেদা মুক্তির আন্দোলন বিএনপির

সংগৃহীত ছবি

খালেদা জিয়া যখন শারীরিকভাবে বেশ স্বাভাবিক ছিলেন, তখন মুক্তি নিয়ে তেমন চেষ্টা চালাননি বিএনপির উচ্চপদস্থ নেতারা। বরং তার অসুস্থতা নিয়ে রীতিমতো ‘রাজনীতি’ করেছেন তারা।

বছর কয়েক ধরেই নানান রোগে ভুগছেন খালেদা জিয়া। অসুস্থ হওয়ায় নির্বাহী আদেশে বাসায় ফিরলেও বর্তমানে তার বেশিরভাগ সময় কাটে হাসপাতালে। তবু চেয়ারপারসনকে ঘিরে যেন আন্দোলন থেমে নেই বিএনপির। তবে দলপ্রধানের মুক্তির দাবি নিয়ে মাঠে নামলেও মাঝপথে বদলে যায় কর্মসূচির ধরন। এভাবেই কেটে গেল দীর্ঘ ছয় বছর। এখন অন্তিম মুহূর্তে তথা ‘বেলাশেষে’ আবারও খালেদার মুক্তির আন্দোলনে নামছে দলটি।

সূত্রমতে, ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে কারাগারে যাওয়ার পর যথেষ্ট সুস্থ ছিলেন বেগম জিয়া। কিন্তু সেসময় তার মুক্তির জন্য তেমন কোনো কঠোর আন্দোলন ডাকেনি বিএনপি। কর্মীদের চাপে শুধুমাত্র লোকদেখানো আর কর্মীদের চাঙা রাখতে কিছু কর্মসূচি দিয়েছিল। ঠিক একই বছরে নেত্রীর মুক্তির আন্দোলন ভুলে একাদশ সংসদ নির্বাচন বানচালে মরিয়া হয়ে ওঠে দলটি। এর মধ্যে খালেদা জিয়ার অসুস্থতা বাড়লেও ‘ভিন্ন এজেন্ডা’ বাস্তবায়নে ব্যস্ত ছিলেন শীর্ষ নেতারা।

তথ্যমতে, গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ায় ২০২০ সালে প্রধানমন্ত্রীর নির্বাহী আদেশে বাসায় ফেরেন খালেদা জিয়া। এরপরই তার মুক্তির আন্দোলন থেকে মূলত সরে আসে দলটি। শুরু হয় ‘বিদেশে চিকিৎসার’ রাজনীতি। এ নিয়ে থেমে থেমে কিছু কর্মসূচি দিলেও জোরালো কোনো আন্দোলন চোখে পড়েনি। এর মধ্যেই দরজার কড়া নাড়ে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন। আর গেল তিন বছর সরকার পতনের এক দফা আন্দোলনেই কাটিয়েছে দলটি।

অর্থাৎ খালেদা জিয়া যখন শারীরিকভাবে বেশ স্বাভাবিক ছিলেন, তখন মুক্তি নিয়ে তেমন চেষ্টা চালাননি বিএনপির উচ্চপদস্থ নেতারা। বরং তার অসুস্থতা নিয়ে রীতিমতো ‘রাজনীতি’ করেছেন তারা। কিন্তু বর্তমানে তার অবস্থা একেবারেই নাজুক। হৃদরোগ, লিভার, ফুসফুস, কিডনি, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন জটিলতায় ভুগছেন তিনি। সম্প্রতি হৃদযন্ত্রে পেসমেকার বসালেও শঙ্কামুক্ত নন। ঠিক এই মুহূর্তে চেয়ারপারসের মুক্তির দাবিতে তিনদিনের কর্মসূচি ডেকেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সমালোচকরা বলছেন, সরকারবিরোধী হিসেবে দেশের চলমান ইস্যু তথা অর্থনৈতিক সংকট বা ট্রানজিট ইস্যু নিয়ে কর্মসূচি দিতে পারতো বিএনপি। অথচ দলটি এমন সময় খালেদা মুক্তির আন্দোলনে নামছে; যা অনেকটা হাস্যকর। কেননা সব মামলা থেকে মুক্তি দিলেও কোনোভাবেই রাজনীতিতে ফিরতে পারবেন না বেগম জিয়া। তার সেই সক্ষমতা এখন আর নেই। মূলত অসুস্থতাজনিত কারণে ‘মারাও যেতে পারেন’ তিনি। সম্ভবত এমনটি আঁচ করতে পেরেই 'বেলাশেষে' সরকারের ঘাড়ে দায় চাপাতে বিএনপি ফের রাজপথে নামার পরিকল্পনা করছে বলেও মনে করছেন তারা।