ঢাকা,  বৃহস্পতিবার  ০৪ জুলাই ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

ট্রলারে ডাকাত দলের হামলা, নদীতে পড়ে ব্যবসায়ীর মৃত্যু

প্রকাশিত: ১৬:৫৫, ২ জুলাই ২০২৪

ট্রলারে ডাকাত দলের হামলা, নদীতে পড়ে ব্যবসায়ীর মৃত্যু

নিহত নুরুজ্জামান (ছবি: সংগৃহীত)

গাজীপুরের শ্রীপুরে নৌকাভ্রমণ শেষে ফেরার পথে নৌকায় ডাকাতদের হামলা ও মারধরের শিকার হয়েছেন কাওরাইদের কয়েকজন ব্যবসায়ী। এ সময় তাদের হামলায় পোলট্রি ব্যবসায়ী নুরুজ্জামান (৩০) ক্ষিরু নদীতে পড়ে নিখোঁজ হন।

পরে সোমবার (১ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টায় শ্রীপুর উপজেলার কাওরাইদ ইউনিয়নের বটতলা (ক্ষিরু নদী) এলাকা থেকে পুলিশ ওই ব্যবসায়ীর মরদেহ উদ্ধার করে। শ্রীপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আমিনুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

রবিবার (৩০ জুন) আনুমানিক রাত ৮টার দিকে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার কাওরাইদ ইউনিয়নের বটতলা এলাকায় ক্ষিরু নদীতে এ ঘটনা ঘটে। নিহত নুরুজ্জামান উপজেলার কাওরাইদ ইউনিয়নের পশ্চিম সোনাব গ্রামের রুহুল আমিনের ছেলে।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, হামলাকারী ডাকাত দলের সদস্যরা হলেন কাওরাইদ ইউনিয়নের বেলদিয়া গ্রামের তমিজ উদ্দিনের ছেলে মাজাহার (২৮), পশ্চিম সোনাব গ্রামের জামাল উদ্দিন ওরফে মনু মিয়ার ছেলে সাইফুল ইসলাম (২৭), কাওরাইদ এলাকার ইব্রাহীম (৩৩), মৃত রশিদ ডাক্তারের ছেলে দিপু (৪০), কাওরাইদ (পশ্চিমপাড়া) এলাকার খোকন মিয়ার ছেলে আকরাম হোসেন (২৫), রফিজ উদ্দিনের ছেলে সবুজ (২৮), কাওরাইদ (বটতলা) এলাকার জয়নাল আবেদীনের ছেলে সাব্বির (২৩) এবং কাওরাইদ (মৃধাপাড়া) এলাকার নাজিম উদ্দিনসহ (২৮) এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৭-৮ জন।

স্থানীয়রা জানান, তাদের নামে আগে থেকেই থানায় একাধিক ডাকাতির মামলা রয়েছে। এলাকায় তাদের ডাকাত হিসেবেই চেনে।

নৌকাভ্রমণে থাকা সুমন জানান, রবিবার সকাল ১০টায় কাওরাইদের বলদীঘাট এলাকার (ক্ষিরু নদী)  থেকে ৩০-৩৫ জন ব্যবসায়ী ট্রলারযোগে ভ্রমণের উদ্দেশ্যে রওনা হন। ভ্রমণে তাদের সঙ্গে চার জন নৃত্যশিল্পীও ছিলেন। সুমন এবং তার এক বন্ধু দুপুরে ১টার দিকে ত্রিমোহনী থেকে তাদের সঙ্গে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে নৌকায় ওঠে। দিনভর তারা ময়মনসিংহ জেলার পাগলা, গফরগাঁও ও নরসিংদী জেলার ঘোড়াশাল এলাকায় শীতলক্ষ্যা, ব্রহ্মপুত্র নদীতে ভ্রমণ শেষে রাত ৮টার দিকে কাওরাইদ ইউনিয়নের বটতলা (ক্ষিরু নদী) এলাকায় পৌঁছালে ১০-১৫ জন ডাকাত লোহার রড, কাঠের ব্যাট, হকিস্টিক ও লাঠিসোঁটা নিয়ে ট্রলারে হামলা করে। এ সময় তাদের এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করে। হামলার পর তাদের কাছ থেকে নগদ টাকা, মোবাইল ফোন লুট করে নিয়ে যায়। ডাকাত দলের হামলা ও মারধরে ২০-২৫ জন নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়ে প্রাণে রক্ষা পায়। এ সময় নৃত্যশিল্পীরাও যে যার মতো পালিয়ে যায়। হামলাকারীদের ভয়ে নুরুজ্জামান নদীতে ঝাঁপ দিলে নিখোঁজ হন।

নিহতের ছোট ভাই আব্দুল হামিদ বলেন, ‘রবিবার সকাল ৮টার দিকে নৌকাভ্রমণে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয় ভাই (নুরুজ্জামান)। রাতে অনেকে বাড়ি ফিরে আসলেও আমার ভাই না আসায় জানতে পারি তাদের ট্রলারে ডাকাতেরা হামলা করেছে। সারারাত খোঁজাখুজি করেও ভাইয়ের সন্ধান পাইনি। সকালে ক্ষিরু নদীর বটতলা এলাকায় হাঁটু বের হয়ে থাকতে দেখে স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ভাইয়ের মরদেহ শনাক্ত করি। খবর পেয়ে শ্রীপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে।’

শ্রীপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সোহেল রানা জানান, নিহত নুরুজ্জামানের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।