ঢাকা,  সোমবার  ০৮ জুলাই ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

গাজীপুরে শ্রমিক অসন্তোষ: পুলিশের মামলায় প্রেপ্তার ৪

প্রকাশিত: ২২:১৮, ৪ জুলাই ২০২৪

গাজীপুরে শ্রমিক অসন্তোষ: পুলিশের মামলায় প্রেপ্তার ৪

সংগৃহিত ছবি

গাজীপুরের শ্রীপুরে আনোয়ার নিট কম্পোজিট মিলের শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা হয়েছে; গ্রেপ্তার হয়েছেন এক শ্রমিক নেতাসহ চারজন।

শ্রীপুর থানার ওসি মো. আকবর আলী জানান, বুধবার রাতে শিল্প পুলিশের এসআই এবিএম কামাল উদ্দিন বাদী হয়ে মামলাটি করেন। এতে অজ্ঞাতনামা ৭০-৮০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

ঘটনার দিন গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য ফোরামের স্থানীয় নেতা নয়ন আহমেদকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়। পরে আরো তিনজন আটক হন। তাদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

শ্রীপুর উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের মুলাইদ গ্রামের রঙ্গিলা বাজার এলাকার আনোয়ারা নিট কম্পোজিট মিলের শ্রমিকরা বার্ষিক হাজিরা বোনাসের দাবিতে মঙ্গলবার সকালে কারখানায় কর্মবিরতি এবং দুপুর ১২টা থেকে পাশের ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। এতে মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তখন শিল্প পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে শ্রমিকদের শান্ত করার চেষ্টা করলে শ্রমিকরা উত্তেজিত হয়ে যান। পরে পুলিশ চড়াও হলে শ্রমিকরা পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করেন।

এ সময় আত্মরক্ষার্থে পুলিশ কয়েকটি রাবার বুলেট ছুড়ে।

গাজীপুর শিল্প পুলিশের এসপি মো. সারোয়ার আলম বলেন, “আনোয়ারা নিট কম্পোজিট মিলের কর্তৃপক্ষ আমাদের বলে যে, মঙ্গলবার সকাল থেকে কারখানায় কাজে যোগ না দিয়ে শ্রমিকরা বসে আছেন। তাৎক্ষণিকভাবে আমাদের টহল পুলিশ ঘটনাস্থল যান।

“যদিও পুলিশ যাওয়ার আগেই দুপুরে শ্রমিকরা কারখানার পাশে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করেন। সেখানে একজন ইন্সপেক্টর, একজন এএসআইসহ আরো ১০ জন পুলিশ ছিল। ইন্সপেক্টরই মূলত মহাসড়ক থেকে শ্রমিকদের সরে যাওয়ার জন্য বুঝাচ্ছিলেন।”

“আমাদের ওই ইন্সপেক্টর শ্রমিকদের দাবির বিষয়ে কয়েকজন শ্রমিক প্রতিনিধি নিয়ে কারখানা ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে কথা বলার প্রস্তাব দেন। অলরেডি ওই বিষয়ে ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে কথাও হয়েছে।”

কারখানা কর্তৃপক্ষের ভাষ্য, শ্রমিকদের বার্ষিক পাওনা ছুটির টাকা এ মাসে দেওয়ার কথা ছিল, কিন্তু সে টাকা আগামী মাসের ৬/৭ তারিখে যে বেতন দেওয়া হবে তার সঙ্গে পরিশোধ করা হবে।

কারখানায় প্রায় দুই হাজারের মত শ্রমিক রয়েছেন। তাদের আগের কোনো মাসের বেতন বকেয়া নেই।

গাজীপুর শিল্প পুলিশের সারোয়ার আলম আরও বলেন, “পুলিশ সবকিছু বুঝানোর পর শ্রমিকদের একটি অংশ ওই প্রস্তাব মেনে নেন। কিন্তু অন্য একটি অংশ তা না মেনে বলেন, ‘পুলিশ হচ্ছে মালিকের পক্ষের লোক, পুলিশকে তারাই এনেছে’।”

সারোয়ার আলমের দাবি, “এসব নিয়ে তখন শ্রমিকদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি, ধাক্কা-ধাক্কি শুরু হয়। এক পর্যায়ে কিছু লোক পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছুড়তে থাকে। এতে ওই ইন্সপেক্টরসহ আমাদের কয়েকজন পুলিশ আহত হন।”

তিনি বলেন, “আমরা ইতোমধ্যে ওই ইট নিক্ষেপকারী ও হামলা ঘটনার ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করেছি। ফুটেজ পর্যালোচনা করে প্রকৃত আসামিদের চিহ্নিত করার চেষ্টা করছি। কেউ যেন অনাহুত হয়রানির শিকার না হন।”