ঢাকা,  বুধবার  ০৩ জুলাই ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

কাপাসিয়ায় ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহায়তার আশ্বাস

প্রকাশিত: ২০:৪৮, ১ জুলাই ২০২৪

আপডেট: ২০:৫১, ১ জুলাই ২০২৪

কাপাসিয়ায় ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহায়তার আশ্বাস

সংগৃহিত ছবি

গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার বারিষাব ইউনিয়নের পূর্ব লোহাদী গ্রামে গত রোববার ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের সহায়তা প্রদানের আশ্বাস প্রদান করেছেন প্রশাসন। জেলা পরিষদ, উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে ঘর করে দেয়া সহ সহায়তা প্রদানের আশ্বাস প্রদান করা হয়েছে। সোমবার সকালে ঝড়ের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন শেষে কাপাসিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মোঃ আমানত হোসেন খান এই আশ্বাস প্রদান করেন।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, রোববার হঠাৎ দুপুর ২ টার টার দিকে প্রায় ২০ বিঘা জমির উপর এই ঘূর্ণিঝড় প্রায় ৩ মিনিট স্থায়ী হয়। এই ঘূর্ণিঝড়ে বিভিন্ন বাড়ির আঙ্গিনায় ও বিভিন্ন জমিনের গাছপালা ভেঙে ও উপড়ে ফেলে দেয়। ঝড়ে এলাকার বহু কৃষকের কলাবাগান, লিচুবাগান, পেয়ারা বাগান, পেঁপে বাগান সহ বিভিন্ন বাগানের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।

ফিরোজা বেগম (৭০) স্বামী মারা গেছেন ১৫ বছর আগে। ৩ ছেলে ও ৫ মেয়ে সবাই যার যার সংসার নিয়ে আলাদা থাকে। স্বামীর দেওয়া ভিটায় একাই বসবাস করেন ফিরোজা বেগম। মাটির ঘরের টিনের চালটি গত রোববার ঘূর্ণিঝড়ে দুটি বসত ঘরের টিনের চাল উপড়ে ফেলে দেয়। স্বামী হারা সন্তানদের সহযোগিতা থেকে বঞ্চিত ফিরোজা বেগম এখন দিশেহারা। গুটিশুটি হয়ে বাড়ির আঙিনায় বসে থেকে শুধু একটাই বলছেন, 'আল্লাহর কাজ আল্লাহ করেছে আমাদের কি করার আছে।' তিনি আরো বলেন, (রোববার দিবাগত রাতে) গতরাতে অনেক বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টি থেকে রক্ষা পেতে অন্যের ঘরে আশ্রয় নিয়েছি। ঘরের জিনিসপত্র সব ভিজে গেছে। দিশেহারা হয়ে আছেন এই সত্তর বছরের বয়োবৃদ্ধা কোথায় যাবেন কোথায় থাকবেন।
 
রিয়াজ উদ্দিন মৌলভী তিনি স্থানীয় একটি দাখিল মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক। তাঁর বসত ঘড়ের দক্ষিণ পাশের ঘরের টিনের চাল বিশিষ্ট গোয়াল ঘরটি ঘূর্ণিঝড়ে উপড়ে পাশের জমিতে নিয়ে ফেলে দিয়েছে। এতে তার প্রায় ৬০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়।

ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত ফারুক মেলিটারির স্ত্রী শিউলি বেগম জানান, তাদের টিনশেড বিল্ডিং এর চাল উড়িয়ে নিয়ে গেছে। রোববার রাতে প্রবল বর্ষণে বাড়ির আসবাবপত্র সব ভিজে গেছে। এই বিপদ থেকে উদ্ধারের পথ খুঁজছেন তাঁরা।

কৃষক রমিজ উদ্দিনের টিনশেড বিল্ডিং এর পাঁচটি কক্ষের টিনের চাল ঘূর্ণিঝড়ে উপড়ে পাশের জমিতে ফেলে দিয়েছে। তিনি জানান, এই ঘূর্ণিঝড়ে আমার প্রায় দুই লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এখন এই ঘর মেরামত করার মতো নগদ অর্থ আমার হাতে নাই। কিভাবে ঘরের চাল মেরামত করবো তাই এখন ভাবছি। আরো যাদের বসত ঘরের ক্ষয়ক্ষতির হয়েছেন, আবদুল খালক, মোঃ সাহিন, হাবিবুর রহমান ও মোঃ হাবিবুর রহমান।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ কোহিনুর রহমান জানান, ঘুর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করা হয়েছে। এতে ৮ জনের বাড়িঘর এবং ১৬ জনের গাছপালা ভেঙে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট তালিকা পাঠানো হয়েছে। 

কাপাসিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মোঃ আমানত হোসেন খান জানান, ঘুর্নিঝড়ের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা নির্ণয় করা হয়েছে। বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ঘরগুলো মেরামত করার জন্য তাৎক্ষণিক ভাবে উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে তাদের সহায়তা প্রদান করা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মহোদয়ের সাথে কথা হয়েছে তিনিও তাদের সহায়তা প্রদান করার আশ্বাস প্রদান করেছেন।