ছবি: সংগৃহীত
ময়মনসিংহের ত্রিশালে খড়ের পুঞ্জিতে আগুন দেওয়া ও চলাচলের আইল কাটাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলায় একই পরিবারের তিনজন নিহত ও অন্তত ৭ জন আহত হয়েছেন।
রোববার রাতে উপজেলার হরিরামপুর ইউপির চাউলাদী নামাপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন চাউলাদী গ্রামের মমতাজ উদ্দিনের ছেলে মিলন মিয়া, নিহত মিলন মিয়ার মামা বুরহান উদ্দিন ভুট্টু ও তার বোন রেনিজা বেগম। এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
স্থানীয় ও ত্রিশাল থানা সূত্র জানায়, রোববার রাতে উপজেলার হরিরামপুর ইউনিয়নে চাউলাদী নামাপাড়া গ্রামের শাহাবুদ্দিনের ছেলে মোজাম্মেল হোসেনের খড়ের পুঞ্জিতে কে বা কারা আগুন দেয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মোজাম্মেল তার চাচাতো ভাইদের সন্দেহ করে গালিগালাজ করতে থাকে। এক পর্যায়ে উভয় পরিবারের লোকজনের মাঝে বাকবিতণ্ডা হয়।
এক পর্যায়ে রোববার রাত তিনটার দিকে মোজাম্মেল ও তার পরিবারের সদস্যরা চলাচলের আইল কেটে দিয়ে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিয়ে তারা চাচাতো ভাই ভুট্টোর পরিবারের ওপর হামলা চালায়।
এতে গুরুতর আহত হন মমতাজ উদ্দিনের ছেলে মিলন মিয়া, তার স্ত্রী তানজিনা, ভুট্টু মিয়া, তার স্ত্রী কল্পনা আক্তার, তার মেয়ে রিপা আক্তার, ছোট মেয়ে লামিয়া আক্তার , রেনুজা বেগম, বেদেনা বেগম, বেদেনার ছেলে মুরতুজ, ও নার্গিস আক্তার।
তাদের উদ্ধার করে স্থানীয়রা ত্রিশাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় ময়মনিসংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
গুরুতর আহত মিলন মিয়ার অবস্থার অবনতি হলে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে সোমবার বিকেলে গাজীপুরে তার মৃত্যু হয়। মিলন মিয়ার মামা বুরহান উদ্দিন ভুট্টুসোমবার রাত ৮টায় ও তার বোন রেনুজা মঙ্গলবার বিকেল ৫টায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় ।
আহতদের মধ্যে গুরুতর ও আশঙ্কাজনক অবস্থায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তানজিনা আক্তার ও নার্গিস বেগম।
এদিকে নিহত মিলন মিয়া ও একই পরিবারের ৯ জন গুরুতর আহত হওয়ার ঘটনায় এলাকায় ক্ষোভ বিরাজ করছে। একই সঙ্গে এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
মিলন মিয়া ও বুরহান উদ্দিন ভুট্টু মিয়ার লাশ ময়মনিসংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে থেকে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে এবং রেনুজার লাশ ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে রয়েছে বলে জানিয়েছে নিহতের পরিবারের সদস্যরা।
মিলন মিয়ার বাবা মমতাজ উদ্দিন বলেন, এমন ছোট ঘটনা নিয়ে মানুষ মানুষকে মেরে ফেলতে পারে, তা ভাবতেই পারছি না। আমার সন্তান হত্যার বিচার চাই।
এ ঘটনায় মিলন মিয়ার ভাতিজা হোসাইন বাদী হয়ে ১১ জনের নামে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
ত্রিশাল থানার ওসি কামাল হোসেন বলেন, ঘটনা জানার পরই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।