ঢাকা,  শুক্রবার  ০৫ জুলাই ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

চার বছর পর চালু হচ্ছে কসবা সীমান্ত হাট

প্রকাশিত: ১৯:২৬, ২ জুলাই ২০২৪

চার বছর পর চালু হচ্ছে কসবা সীমান্ত হাট

ছবি: সংগৃহীত

অবশেষে দীর্ঘ চার বছর পর চালু হতে যাচ্ছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা সীমান্ত হাট। মঙ্গলবার (২ জুন) বেলা সাড়ে ১১টায় দুই দেশের (বাংলাদেশ-ভারত) স্থানীয় প্রশাসনের এক বৈঠকে আগামী ২৯ জুলাই হাটটি চালুর বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।

বৈঠকে বাংলাদেশ থেকে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জেসমিন সুলতানা, কসবা উপজেলার চেয়ারম্যান ছাইদুল ইসলাম স্বপন, কসবা পৌরসভার মেয়র গোলাম হাক্কানী, কসবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ শাহরিয়ার মুক্তার, কসবা থানা পুলিশের ওসি রাজু আহমেদ এবং ভারত থেকে সিপাহীজলা জেলা এডিএম সুব্রত মজুমদার, বিশালগড় ডিসি রমেশ চৌধুরী, এসডিএম রাকেশ চক্রবর্তী, ডিসি (ডেপুটি কালেক্টর) বিজেন্তা সরকার, ডিএসপি পুলিশ পান্না লাল সেন।

এদিকে আবর্জনার স্তূপ হয়ে থাকা হাটটি পুনরায় চালুর উদ্যোগ নিলে ইতোমধ্যে শুরু হয় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা। এতে বেশ উচ্ছ্বসিত হাটের ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা।

জানা যায়, ২০১৫ সালের জুনে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার তারাপুর এবং ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের সিপাহিজলা জেলার কমলা সাগরে দুই দেশের শূন্যরেখায় প্রায় তিন একর জমির ওপর টিনশেডের স্থাপনা তৈরি করে যাত্রা শুরু করে সীমান্ত হাটটি। শুরুতে হাটটিতে বেশ চাঙাভাব থাকলেও দুই বছর পর পণ্যের জোগান না পাওয়ায় স্থবির হয়ে পড়ে। আর করোনা মহামারির প্রভাবে ২০২০ সালে হাটটির কার্যক্রম বন্ধ করে দেয় দুই দেশের সরকার।

স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলছেন, বিভিন্ন জায়গা থেকে ক্রেতারা এখানে আসায় ব্যবসায় লাভ হয়। বর্ডার হাটটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে ব্যবসায়ীরা। পুনরায় আবার হাটটি চালু হওয়ায় বেশ উচ্ছ্বসিত। তাই অতিদ্রুত বর্ডার হাটটি চালু হলে ব্যবসায়ীরা যেমন উপকৃত হবে তেমনি হাটটি পর্যটন এলাকা হিসেবে জমজমাট হবে বলে আশা করছেন ব্যবসায়ীরা।

বৈঠক শেষে ভারতের সিপাহীজলা জেলা এডিএম সুব্রত মজুমদার বলেন, দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা এই হাটটি পুনরায় চালুর বিষয়ে দুই দেশের প্রশাসন মিলে বৈঠক করেছি। বৈঠকে সম্ভাব্য তারিখ আগামী ২৯ জুলাই নির্ধারণ করা হয়েছে। তাছাড়া পণ্যের চোরাচালান রোধে দুদেশের কর্তৃপক্ষ ইতিবাচক ভূমিকা পালন করবে।

তিনি আরও বলেন, হাটে নতুন পণ্যের চাহিদা থাকলে আর সেটি ব্যবসায়ীরা আবেদন করলে নতুন পণ্য যোগ করা যায় কি না সে বিষয়ে আলোচনাসাপেক্ষে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। আর বাংলাদেশ থেকে নতুন পণ্য হিসেবে ইলিশ মাছ রাখার কথা জানানো হয়েছে এবং শুঁটকি মাছের সরবরাহ যেন বাড়ানো হয় সেটি অনুরোধ করা হয়েছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জেসমিন সুলতানা বলেন, আজকের বৈঠকে দুই দেশের হাট নিয়ে পর্যালোচনা করা হয়। এতে হাট চালুর আগে যেসকল কাজগুলো বাকি রয়েছে এগুলো শেষ করে জুলাই মাসের শেষের দিকে হাটটি চালু করতে পারব। তাছাড়া হাটে ভারত থেকে ৫০টি এবং বাংলাদেশ থেকে ২৬টি দোকান চালু ছিল। যদি চাহিদা থাকে এবং স্থান সংকলন করতে পারি তাহলে দোকানের সংখ্যা কিছুটা বাড়ানো হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে জেসমিন সুলতানা বলেন, ক্রেতা দুদেশেরই সমান সমান থাকবে। তাছাড়া বাংলাদেশের ভালো ভালো পণ্যগুলো যদি হাটে এনে ভারতের ক্রেতাদের কাছে পরিচিত করা যায় তাহলে তারাও পণ্যগুলো ক্রয় করবে।

প্রসঙ্গত, বন্ধ হওয়ার আগে শুরু থেকে সীমান্ত হাটের মোট ১৫২টি সাপ্তাহিক হাটের পাওয়া তথ্যানুযায়ী, বাংলাদেশ অংশে বিক্রি হয়েছিল মাত্র ২৮ লাখ ৩৬ হাজার টাকার পণ্য, আর ভারত অংশে পণ্য বিক্রি হয়েছিল ১৪ কোটি ৭৮ লাখ টাকার।